ম্যালেরিয়া সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ম্যালেরিয়া জীবাণুর বেড়ে ওঠার জন্য চাই একটা জীবদেহ । আর ঠিক এই কারণেই সেই জীবাণুদের সঙ্গে মশার পরিচয় হয় আজ থেকে প্রায় 30 কোটি বছর আগে । আজকের মতাে মানুষ তখন পৃথিবীতে কোথায় ! আজকের মতাে মানুষ এসেছিল তার অনেক পরে আজ থেকে মাত্র এক লক্ষ 30 হাজার বছর আগে । বংশবৃদ্ধির জন্য মশার দেহ ছাড়াও ম্যালেরিয়া জীবাণুর চাই আরেকটা প্রাণীর দেহ । প্রায় 100 - র বেশি বিভিন্ন প্রজাতির ম্যালেরিয়া জীবাণু , সাপ থেকে আরম্ভ করে পাখি পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের মেরুদণ্ডী প্রাণীর দেহে বংশবৃদ্ধি করে চলেছে । কিন্তু মজার ব্যাপার হলাে , ম্যালেরিয়া জীবাণুর মাত্র চারটি প্রজাতি ছাড়া আর অন্য কোনাে প্রজাতি মানুষকে তাদের বংশবৃদ্ধির নিয়মিত মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেনি । এই ফাকে তােমাদের ম্যালেরিয়া জীবাণুর একটা প্রজাতির নাম জানিয়ে রাখি । - Plasmodium vivax । মানুষের রক্ত পরীক্ষা করলে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে লােহিত রক্তকণিকায় এই জীবাণুগুলাে দেখা যায় । প্লাসমােডিয়াম যে মশা আর মেরুদণ্ডী প্রাণীদের দেহে আশ্রয় নেয় , তারা হলাে পােষক । এই পোেষকদেরও আবার রকমফের আছে । প্লাসমােডিয়াম জীবাণু বেঁচে থাকার জন্য মশা ও অন্য আর একটা মেরুদণ্ডী প্রাণীর ( যেমন- মানুষ )ওপর নির্ভরশীল । মশার দেহে এদের বংশবৃদ্ধি হয় । আবার মানুষ বা অন্য মেরুদণ্ডী প্রাণীর দেহে এরা বেড়ে ওঠে । তাই মশা হলাে মুখ্য বা নির্দিষ্ট পােষকআর মেরুদণ্ডী প্রাণীরা হলাে গৌণ বা অন্তর্বর্তী পােষক ।
ম্যালেরিয়ার সঙ্গে মানুষের চেনা জানা
আজ থেকে প্রায় দশ হাজার বছর আগে মানুষ ভবঘুরে জীবন ছেড়ে কৃষিজীবনে প্রবেশ করে । তখন থেকেই ম্যালেরিয়া জীবাণু মানুষকে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করতে আরম্ভ করল । কী এমন হলাে যে প্লাসমােডিয়ামের হামলায় মানুষ কাবু হয়ে পড়ল— নীচে লেখার চেষ্টা করে দেখি । ভবঘুরে জীবন ছেড়ে মানুষ কৃষিজীবন আরম্ভ করার সঙ্গে প্লাসমােডিয়ামের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী হতে পারে বলে তােমার মনে হয় ?
❑ মানুষ দল বেঁধে একসঙ্গে একজায়গায় দীর্ঘদিন থাকতে আরম্ভ করল । ম্যালেরিয়ার সঙ্গে মানুষের প্রথম পরিচয় হয় আফ্রিকায় । পরের দিকে খাবার আর থাকার জায়গার খোঁজে মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল । আর মানুষ তার নিজের শরীরে বহন করে নিয়ে চলল ম্যালেরিয়ার জীবাণুকে । আফ্রিকা থেকে ম্যালেরিয়া , ইউরােপে আর গােটা এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ল । এমনকি প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপগুলােও ম্যালেরিয়ার কবল থেকে রক্ষা পায়নি । তুষার যুগে আক্রান্ত মানুষের সঙ্গে সাইবেরিয়া থেকে আলাস্কা হয়ে আমেরিকায় গিয়ে হাজির হয়েছিল ভাইভ্যাক্স ম্যালেরিয়া । 1600 সালে পেরুর পাদরি জুয়ান লােপেজ , আবার কারাের কারাের মতে 1633 সালে কালাজ্ঞা সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে ম্যালেরিয়া জ্বর সারানাের ওষুধ আবিষ্কার করেন । ম্যালেরিয়ার ওষুধ তাে আবিষ্কার হয়ে গেল । কিন্তু ম্যালেরিয়া জীবাণুকে তখনও কেউ চোখে দেখেনি । 1880 সালের 24 ডিসেম্বর ফরাসি সামরিক বাহিনীর ডাক্তার চার্লস লুই আলফাসসা লাভেরা আলজেরিয়ায় অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে প্রথম মানুষের রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু খুঁজে পান ।
ম্যাপে পৃথিবী জুড়ে ম্যালেরিয়ার যাত্রা পেন বা পেনসিলের সাহায্যে তীরচিহ্ন দিয়ে দেখাও । ম্যালেরিয়া যে মশাবাহিত রােগ , তার প্রমাণ দিলেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর এক ডাক্তার রােনাল্ড রস । 1897 সালের 20 আগস্ট সেকেন্দ্রাবাদে স্ত্রী অ্যানােফিলিস মশার পাকস্থলীতে তিনি ম্যালেরিয়া জীবাণুর সন্ধান পান । এরপর তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতালে ( বর্তমান
SSKM হাসপাতাল ) গবেষণার বাকি কাজটুকু শেষ করেন তার এই কাজের জন্য রােনাল্ড রস 1902 সালে নােবেল পুরস্কার পান ।
SSKM Medical College & Hospital
This is dummy text. It is not meant to be read. Accordingly, it is difficult to figure out when to end it. But then, this is dummy text. It is not meant to be read. Period.
ConversionConversion EmoticonEmoticon