খাদ্যবাহিত রোগ ও তার প্রতিকার সম্বন্ধে আলোচনা

 খাদ্যবাহিত রোগ ও তার প্রতিকার সম্বন্ধে আলোচনা


ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ নানাধরনের ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন ধরনের খাবারকে ভেঙে নানাধরনের অ্যাসিড এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ তৈরি করে । খাবারে উপস্থিত এইসব ব্যাকটেরিয়া সবসময় যে ক্ষতিকারক হয় তা নয় । কিন্তু তাদের তৈরি করা ওইসব বর্জ্য পদার্থগুলাে খাবারের বৈশিষ্ট্য বা স্বাদ বদলে দেয় বা খাবারটাকেই নষ্ট করে দেয় । এমনকি নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবারের সঙ্গে ওইসব বর্জ্য পদার্থগুলাে আমাদের শরীরে ঢুকলে অনেকসময় নানারকম রােগেরও সৃষ্টি করতে পারে । 

যেসব খাবারে প্রােটিনের পরিমাণ বেশি ( যেমন । মাংস , ডিম , মাছ , ডেয়ারিজাত খাবার ) সেইসব খাবারে কিছু ব্যাকটেরিয়া সহজে জন্মায় । আবার কোনাে কোনাে ব্যাকটেরিয়া কম প্রােটিনযুক্ত খাবারেও ( যেমন - ফল , সবজি ) জন্মায় , কিন্তু তারা কাজ করে তুলনায় অনেক ধীরে । ফলে রান্নাঘরে সাধারণ তাপমাত্রায় পেঁয়াজ বা কোনাে ফল আর মাংস রেখে দিলে , মাংসতেই আগে পচন ধরার সম্ভাবনা বেশি থাকে । কিন্তু এইসব ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও মারাত্মক হচ্ছে আরও অন্য কিছু ধরনের ব্যাকটেরিয়া , যারা খাবারে কোনাে খারাপ গন্ধ বা স্বাদ তৈরি করে না বা খাবারের চেহারায় কোনাে বদল ও ( যেমন হড়হড়ে ভাব , রং পালটে যাওয়া ) আনে না । ফলে বাইরে থেকে দেখে বা খেয়েও হয়তাে খুব একটা কিছু পার্থক্য বােঝা যায় না । কিন্তু এইসব ব্যাকটেরিয়া খাবারে বিষক্রিয়া ঘটায় , যা ডেকে আনতে পারে মারাত্মক সব অসুখ , অনেকসময় এমনকি মৃত্যুও । এদের সম্বন্ধে আমরা পরে জানব । আগে দেখে নিই , তােমরা যে পাঁউরুটিটা খেতে চাইলে না , সেটা খারাপ হয়ে যাওয়ার পেছনে কী কারণ আছে । 

ছত্রাকের আক্রমণ


যে পাঁউরুটিটা তােমরা খেতে চাইলে না , ওই পাউরুটিটায় আক্রমণ করেছিল একধরনের ছত্রাক । এরাও । | অণুজীব । যেসব খাবারে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে , ছত্রাকরা সাধারণত সেইসব খাবারেই জন্মায় ।। বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকের আক্রমণের ফলে খাবারের বাহ্যিক চেহারা বা রঙের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয় । এসাে চিনে নিই খাবারে বাসা বাঁধা প্রধান কয়েক ধরনের ছত্রাককে । Rhizopus প্রজাতির ছত্রাক | Penicilliuons প্রজাতির ছত্রাক | Neurospora প্রজাতির ছত্রাক [ ) 

ছত্রাক উপকারও করে 

পাঁউরুটি , চিজ , অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় –এইসব তৈরি করতে অনেকসময় আমরা ছত্রাকের সাহায্য নিই । এক্ষেত্রে বেশি । কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের প্রতি তাদের আকর্ষণই ওইসব জিনিস | তৈরিতে সাহায্য করে । যেমন কয়েক ধরনের পেনিসিলিয়াম থেকে অ্যান্টিবায়ােটিক ওষুধ তৈরি হয় , পাউরুটি তৈরি করতে লাগে ইস্ট । 

উৎসেচকের ক্রিয়া 

অণুজীব ছাড়াও অন্য আর এক কারণেও খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে । সেই কারণটা হলাে উৎসেচকের ক্রিয়া । উদ্ভিদজাত বা প্রাণীজাত খাবার কোশ দিয়ে তৈরি । আর ওই কোশে থাকে নানাধরনের উৎসেচক । উদ্ভিদজাত বা প্রাণীজাত খাবারগুলাে টাটকা অবস্থায় রান্না না করে ফেলে রাখলে উৎসেচকরা ওইসব খাবারের রং বা স্বাদে অনাকাঙ্খিত বদল আনতে পারে । অর্থাৎ এক্ষেত্রেও উৎসেচকের ক্রিয়ার জন্য খাবারগুলাে নষ্ট হয়ে যেতে পারে । এবারে এসে দেখা যাক কী কী করলে এই ধরনের নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার থেকে হওয়া রােগ আমরা এড়াতে পারি ।
Previous
Next Post »